গণপরিবহন চালু হচ্ছে ১৭ মে!
সবকিছু ঠিক থাকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ১৭ মে থেকে সীমিত আকারে দেশে গণপরিবহন চালু হচ্ছে। তবে ঈদের সময় চারদিন সম্পূর্ণভাবে তা বন্ধ থাকবে। গণমা’ধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন এসব কথা জানিয়েছেন। তবে বাস, ট্রেন, নৌ কর্তৃপক্ষ এখনো এ বিষয়ে জানে না।
প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন বলেছেন, জীবি’কার তাগিদে একটু একটু করে সবই চালু করতে হবে। তবে তা স্বাস্থ্যবিধি মেনে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন কিভাবে চলবে- এমন প্রশ্নে’র জবাবে তিনি বলেন, ৪০ সিটের গাড়ি ২০ সিট পরিপূর্ণ হবে। অর্থাৎ এক আসন ফাঁকা রেখে মানুষকে বসাতে হবে। গাড়িতে উঠার আগে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে দিতে হবে। জীবাণুনাশক স্প্রে করতে হবে।
১৭ মে থেকে গণপরিবহন চালানোর বিষয়ে রেল’মন্ত্রী নুরু’ল ইসলাম সুজন বলেছেন, ১৭ মে থেকে ট্রেন চালানোর বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা পাইনি। সরকার যখনই চাইবে তখনই যাত্রীবাহী ট্রেনও চলবে। একই কথা বলেছেন, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীও। মন্ত্রিপরিষদ থেকে যখনই নির্দে’শনা দেয়া হবে তখনই নৌযান চলাচল শুরু করবে বলে জানান তিনি।
এভাবে নিয়ম মেনে বাস চালাতে খুব একটা আগ্রহী নয় মালি’কপক্ষ। এ অবস্থায় কি হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, জীবন যেমন জরুরি তেমনি জীবিকাও দরকার। আর এ দুটোকে স’মন্বয় করতে গেলে এর বিকল্প কিছু নেই।
ঈদের সময় সরকারি কর্মজীবীদের স্টেশনে থাকতে বলার কা’রণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে জরুরি পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আর জরুরি পরিস্থি’তিতে সরকারি কর্মজীবীদের দায়দায়িত্ব বেশি। যে কোনো সময় যে কোনো দায়িত্ব পড়তে পারে। এই দায়িত্ব পালনের জন্য সরকারি কর্মজী’বীদের স্টেশ’ন ছাড়তে না করা হয়েছে।
ঈদে চারদিন গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণ জানি’য়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে ঈদ উৎসবে সবাই গ্রামের বাড়ি যেতে চান। এর ফলে বাসে, বাসের ছাদে, ট্রেনে, ট্রেনের ছা’দে, নৌকায়, লঞ্চে যে যেভাবে পারেন সবাই গ্রামের বাড়িতে ছুটেন। কিন্তু এবার করোনায় দেশের পরিস্থিতি ভালো না, মানুষকে বলা হ’চ্ছে ঘরে থাকতে। তবুও মানুষ ঘরে থাকছেন না।
একপর্যায়ে জীবিকার তাগিদে ভিড় কম হয় এমন কিছু প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হ’য়েছে। কিন্তু ঈদের সময় গণপরিবহন চালু থাকলে মানুষের ভিড় বেশি হবে। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। মূলত সংক্র’মণের ঝুঁকির কারণেই ঈদের সময় চারদিন গণপরিবহন বন্ধ থাকবে।
এদিকে ব্যবসায়ী, সাধারণ ক্রেতা, পরিবহন খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি’রা বলছেন, সীমিত আকারে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। এজন্য তাদের প্রস্ততিও রয়েছে।
তারা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে গণপরিবহন চালা’নো যায়। এ অবস্থায় গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে ঈদুল ফিতরে দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থা’কবে বলে জানানো হয়। এছাড়া সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে একই দিন সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, সাধা’রণ ছুটির সঙ্গে সংগতি রেখে গণপরিবহন বন্ধ থাকবে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে দোকানপাট ও শপিংমল আগা’মী ১০ মে থেকে খুলে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এরপরই ব্যবসায়ী নেতা ও ক্রেতারা বলছেন, সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মা’নার শ’র্তে দোকানপাট খুলে দেয়া হলেও তারা যাতায়াত করবেন কিভাবে? এজন্য সীমিত আকারে গণপরিবহনকে চলাচল করতে দে’য়া উচিত। এ বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন দুয়েক দিন না গেলে বিষয়টি সম্পর্কে বল’তে পারব না।
রাজধানীসহ সারাদেশে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি চলছে। এই ছুটি ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ ছুটিতে সারাদেশ কার্যত ‘লকডাউন’ অব’স্থায় থাকার ক’থা। প্রথমদিকে ‘সব বন্ধ’ রেখে কঠোরভাবেই ‘ঘরবন্দি’ অবস্থা চলছিল। তবে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ‘অবরুদ্ধ’ পরি’স্থিতি কয়েক দিন ধরে ভেঙে পড়েছে।
বিশেষ করে দিনমজুর, গৃহকর্মীসহ রোজ কাজের ওপর নির্ভশীল মা’নুষ রাস্তায় বেরিয়ে প’ড়ছে। তৈরি পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। তবে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় পোশাককর্মীরা আইন পরিপ’ন্থি হলেও পণ্যবা’হী গাড়িতে কর্ম এলাকায় ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন। রাতের আঁধারে সাধারণ যাত্রীদের একটি অংশ এক জেলা থে’কে অন্য জেলায় যাচ্ছেন পণ্যবাহী গাড়িতে। সে কারণে সীমিত আকারে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর পক্ষে পরিবহন মা’লিক ও শ্রমিকরা।