বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় আর চায় না পুতিন

মুসলিম ভয়েস ডেস্ক | রাশিয়াভিত্তিক বেশকিছু সূত্র ইঙ্গিত দিচ্ছে সিরিয়ায় নতুন রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যাপারে আগ্রহী রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন খুব শীঘ্রই বাশার আল আসাদকে সরানোর ব্যাপারে সম্মতি দেবেন। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গণঅভ্যুত্থান শুরু হওয়ার পর ২০১৫ সাল থেকেই বাশার আল আসাদকে সরাসরি সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছেন পুতিন। সম্প্রতি রাশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল (আরআইএসি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাশার আল আসাদকে সরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে পুতিনের একটি পরিকল্পনার ইঙ্গিত দেয়া হয়।

রাশিয়া সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে যুক্ত এ সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, বাশার আল আসাদ সিরিয়ার নেতৃত্ব আর দিতে পারছেন না। ফলে তিনি এখন রাশিয়ার জন্য ‘বোঝা’ হয়ে গেছেন। এমনকি তার ব্যর্থতার কারণে সিরিয়া পরিস্থিতি আফগানিস্তানের মতোও রূপ নিতে পারে। এমন অবস্থায় তুরস্ক ও ইরানের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রাশিয়া বাশার আল আসাদের স্থলে অন্য কাউকে আনতে পারে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, চুক্তি অনুযায়ী সিরিয়ায় একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার হতে পারে। যেখানে বিরোধী দল, সরকারি দল ও কুর্দি এসডিএফের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। তবে অবশ্যেই বাশাল আল আসাদ থাকবেন না।

সবার পছন্দের ব্যক্তিই হবেন প্রেসিডেন্ট। গত সপ্তাহে ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুতিন বাশার আল আসাদকে চাপ দিচ্ছেন সিরিয়ার বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনায় বসতে। যাতে দীর্ঘমেয়াদে একটি চুক্তিতে আসা যায়। পুতিনের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে এখন সিরিয়া। প্রতিবেদনে এমন মন্তব্য করে বলা হয়, পুতিন ধৈর্য্য হারা হয়ে যাচ্ছেন। তবে সিরিয়ার ৯ বছরের গৃহযুদ্ধে একটানা সাহায্য করে আসা ইরানের অবস্থানে কোন পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যায় না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার অর্থনীতি এমনিতেই ভালো যাচ্ছে না। তার ওপর জ্বালানি তেলের বাজার পড়ে যাওয়ায় রাশিয়ার আয়ের একটি বড় উৎস সংকোচিত হয়ে গেছে। এর মধ্যে নতুন সংকট করোনাভাইরাস। তাই সিরিয়াতে আর অর্থ ও সামরিক শক্তি ক্ষয় না করে পুতিন একটি সমাধানে যেতে চান। তিনি একটি সরকার গঠন করতে চান যেটি আন্তর্জাতিক বৈধতা পাবে এবং সবার অংশিদারিত্ব থাকবে।

এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আসাদকে বিদায় করে হলেও তা করতে চায় রাশিয়া। সাবেক কূটনৈতিক ও মস্কোর থিংকট্যাঙ্ক ইউরোপ-মিডলইস্ট সেন্টারের পরিচালক অ্যালেজন্ডার সুমিলিন বলেন, ‘ক্রেমলিনকে এখন সিরিয়ার মাথাব্যথা থেকে বাঁচতে হবে। সমস্যা শুধু এক ব্যক্তিকে নিয়ে। যদি আসাদ নতুন সংবিধান মেনে নিতে সম্মত না হন অর্থাৎ সরে না দাঁড়ান, তাহলে তিনি নিজেই সরকারকে ঝুঁকিতে ফেলবেন।’ রাশিয়ার মিডিয়াগুলো এখন রাখঢাক ছাড়াই আসাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করছে। যা মস্কোর অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে ।

কক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সেনের আকটুর্ক বলেন, ‘তেলের আকস্মিক দরপতন এবং রাশিয়ার নিন্মমুখী অর্থনীতি দামেস্কো ও মস্কোর মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি করছে। সূত্র: আল বাওয়াবা

Leave a Reply

Your email address will not be published.